এতদিন পর্যন্ত তৃনমূলের যাদেরকে বিজেপির ছোঁয়া দেখা গিয়েছে তাদের বিরুধ্যে ব্যাবস্থা দেখে কার্যত কাঁটা হয়ে ছিলেন মেদিনীপুরের তিন জেলার তৃণমূল নেতা, জনপ্রতিনিধিরা। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মেলার অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে দেখা যাওয়ায় প্রথমে শো-কজের মুখে পড়েন এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস। তারপরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে শো-কজ করা হয়। তিনি স্কুলের অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের সঙ্গে এক মঞ্চে ছিলেন। দু’টি ক্ষেত্রেই বিজেপি সংসর্গের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের তরফে শো-কজ করা হয় দুই বিধায়ককে।
খড়্গপুরের তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকারের ক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা হল না। গত শুক্রবার রেলের বৈঠকে খড়্গপুরের বিজেপি নেতা, উপ-নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমচাঁদ ঝা-এর সঙ্গে দেখা যায় প্রদীপকে। তারপর দু’দিন হয়ে গেল। প্রদীপের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও ব্যবস্থা নেয়নি দল। তৃণমূলের অন্দরেই গুঞ্জন, খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার দু’-দু’বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে বসেছেন। এখন আর কী করে বিজেপি-র ‘ছোঁয়া’য় ব্যবস্থা নেবে দল!
এ নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি-ও। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসায় তৃণমূল নেত্রীকে তো তাহলে নিজেকেই শো-কজ করতে হবে। তৃণমূলের উচিত যাঁদের ইতিমধ্যে দল শো-কজ করেছে, তাঁদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।”
প্রদীপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অবশ্য ব্যাখ্যা, “খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওটা অনুষ্ঠান মঞ্চ ছিল না। রেল সর্বদলের প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডেকেছিল। সেখানে কার সঙ্গে কার দেখা হল সেটা এখনও আমাদের দল বিচার করে দেখেনি। এখনও পর্যন্ত এই ব্যপারে দল থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি।”
গত শুক্রবার খড়্গপুরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের ডাকা বৈঠকে বিজেপি নেতা প্রেমচাঁদ ঝা-এর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল বিধায়ক প্রদীপকে। এতে অন্যায় খুঁজে পাচ্ছেন না প্রদীপ নিজেও। বলছেন, “এটা দলবিরোধী কার্যকলাপ নয় যে দল ব্যবস্থা নেবে। মানুষের স্বার্থেই রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করেছি। সেখানে কে থাকবে আমার জানার কথা নয়। আর একজন নাগরিকের সঙ্গে দেখা হলে বিধায়ক হিসাবে সৌজন্য দেখানো উচিত বলেই মনে করি।”