আইনি কারনে দিল্লি সরকার হাইকোর্টে বলেছিল,২২ শে জানুয়ারি ফাঁসি সম্ভবপর নয়। তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ নতুন দিনতারিখ চেয়েছিল। ফলে নির্ভয়া কাণ্ডে নিম্ন আদালতের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা নির্ধারিত দিনে কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সেই সব জল্পনা-জটিলতায় ইতি টানল দিল্লির দায়রা আদালতই। জারি করল নয়া মৃত্যু পরোয়ানা। সেই অনুযায়ী ফাঁসির দিনক্ষণ ধার্য করা হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি, সকাল ছ’টা। অর্থাৎ ফের পিছিয়ে গেল নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর ফাঁসির দিন। ঘটনাচক্রে সেই দিনই বাজেট পেশ হওয়ার কথা।
গত ৭ জানুয়ারি নির্ভয়া কাণ্ডে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিল দিল্লির দায়রা আদালত। ওই পরোয়ানায় বলা হয়েছিল, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় চার দণ্ডিতের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। সেই মতো প্রস্তুতি চলছিল তিহাড় জেলে। শুক্রবার নতুন পরোয়ানা জারি করে ফাঁসির জন্য নতুন দিন ও সময় ঘোষণা করল সেই দায়রা আদালত। ফলে আরও এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসি।
এক এক করে আইনের সব রাস্তা যখন বন্ধ হচ্ছিল, তখনই শেষ বিকল্প হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) জানিয়েছিল দুই দণ্ডিত বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিংহ। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এর পর প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় মুকেশ। একই সঙ্গে দিল্লির দায়রা আদালতের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা খারিজ করার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টেও গিয়েছিল মুকেশ। মুকেশের আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করতেই পারেন। তাই মৃত্যু পরোয়ানা খারিজ করা হোক।
সেই মামলার শুনানিতেই দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, আইনের সমস্ত বিকল্প শেষ হওয়ার পরেও ফাঁসির প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ১৪ দিন সময় দিতে হয়। জেল ম্যানুয়ালেও সেই কথাই বলা হয়েছে। ফলে ২২ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব নয়। তার জন্য অবশ্য বিজেপির তোপের মুখেও পড়েছিল দিল্লির আপ সরকার। কিন্তু হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, মৃত্যু পরোয়ানা জারির মধ্যে কোনও গলদ নেই। তবে এই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বা নিম্ন আদালতে যেতে পারে আবেদনকারী।
মুকেশ যে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিল, দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, উপ-রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক হয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে গিয়েছিল গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে।সেই আর্জি খারিজের পরেই দিল্লি আদালত জারি করল নতুন মৃত্যু পরোয়ানা।