নির্ভয়া মামলার চার অপরাধীকে একসঙ্গে ফাঁসি দিতে হবে বলেই রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তার নির্দেশ, ফাঁসির সাজা এড়ানোর যে সব আইনি পথ খোলা রয়েছে, চার অপরাধীকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তা কাজে লাগিয়ে ফেলতে হবে। তার পরে প্রশাসন প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ করতে পারবে।
হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নির্ভয়ার পরিবার। নির্ভয়ার মা আশাদেবী বলেন, ‘‘হাইকোর্ট যে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে, তাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ এর পরে দ্রুত ফাঁসি হতে পারবে।’’
যদিও হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ দিনই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার। তাদের বক্তব্য, যার সব আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে, তার ফাঁসি বাকিদের জন্য ঝুলে থাকছে। দিল্লির কারাবিধিতে একসঙ্গে ফাঁসির বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। এ দিন হাইকোর্টেও কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার যুক্তি ছিল, অপরাধীরা আইনের নির্দেশকে অস্থির করে তুলছে। ফাঁসি পিছনোর জন্য দেরি করে আইনি আর্জি জানাচ্ছে। তাদের আর সময় দেওয়া উচিত নয়। প্রশাসনের তরফ থেকে দাবি উঠেছিল, যাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে, তাদের আগে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সুরেশ কাইত তাঁর রায়ে বলেন, আইন অনুযায়ী, একই অপরাধে দণ্ডিতদের আলাদা আলাদা দিনে ফাঁসি দেওয়া যায় না। অপরাধীদের ভাগ্য একটি নির্দেশে ঠিক হয়েছে। তাই তাদের ফাঁসিও একসঙ্গে হতে হবে।
তবে অপরাধীরা যে সাজার বিরুদ্ধে আর্জি জানাতে যথেষ্ট দেরি করেছেন, তা-ও উল্লেখ করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে হাইকোর্ট বলেছে, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭-র মে মাসে অপরাধীদের আর্জি খারিজ করে দিলেও কেউ মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেনি। অপরাধীদের আইনজীবী এ পি সিংহ বলেন, ‘‘হঠাৎই সবাই জেগে উঠেছে। রাষ্ট্রপতি বিদ্যুৎগতিতে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কেন্দ্র কখনও এই মামলায় শরিক ছিল না। তারা এখন দেরি করার জন্য অপরাধীদের দিকে আঙুল তুলছে।’’
নির্ভয়া-মামলার চার অপরাধীর ফাঁসির জন্য ১ ফেব্রুয়ারি দিনটি নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু চার অপরাধীর মধ্যে দু’জনের প্রাণভিক্ষার আবেদনে তখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা আদালত ফাঁসির নির্দেশ স্থগিত করে দেয়। মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয় সিংহ ও পবন গুপ্তর মধ্যে পবন এখনও প্রাণভিক্ষার আবেদন জানায়নি। অক্ষয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন আজ রাষ্ট্রপতি খারিজ করেছেন।