মোবাইল বন্ধ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা, রাজ্যের জবাব চাইল হাইকোর্ট। কয়েক দিন আগেই কোভিড হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বন্ধের কথা জানিয়েছিল রাজ্য। এবার সেই মোবাইল ব্যবহার নিয়েই প্রবেশ ও ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলায় ৭ মে-র মধ্যে রাজ্যকে নিজের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকেও এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলায় করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ২০ ছুঁয়েছে। ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তিনি বলেন, "কিট নেই। কেন্দ্র কিট তুলে নিয়েছে। ২ রকম কিটই তুলে নিয়েছে। কিট দিতে পারছে না কেন্দ্র। মাত্র ২৫০০ কিট দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কিট আসছে না। এহেন পরিস্থিতিতে আপনারাই বুঝে নিন। সময় মতো ঠেকাতে না পারলে বিপদ আছে।" কয়েকদিন আগেই একথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সোমবার মুখ্যসচিব বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ জন। এই সংক্রমিতরা মূলত পাঁচটি জেলার। আক্রান্তেরা সকলেই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা বলে মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।
এ দিন মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৪। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ জন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫২২। সেই সঙ্গে তিনি সোমবারই জানান, রাজ্যে ‘ডাবলিং রেট’ বা সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার হার অনেকটাই কমেছে। মুখ্যসচিবের দাবি, মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ৪ দিনে সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সেই হার কমে হয় ৬ দিন। বর্তমানে সেটাই ৯ দিনে হচ্ছে। এই তথ্য দিয়ে মুখ্যসচিব ইঙ্গিত দেন যে রাজ্যে সংক্রমণের পরিমান কমছে।
অন্যদিকে, সোমবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোযণা মতো দেশ জুড়ে দ্বিতীয় দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হবে ৩ মে। সেই মেয়াদ আর বাড়বে কি না তা নিয়ে ওই বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন কতদিন চলবে আমরা বুঝতে পারছি না। লকডাউন ঘোষনার সময়েও আমাদের জানানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর একটা কথা আমার খুব ভাল লেগেছে। সংক্রমণ কম হলেও মহান নয়। বেশি হলেও খারাপ বলা যাবে না। ভাল তো। কেন্দ্র যা বলবে তাই মানব।’’ এর পরেই তার মন্তব্য, ‘‘লকডাউন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্র। আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। তবে এ দিন প্রধানমন্ত্রীর শরীরী ভাষা দেখে মনে হল, এই অবস্থা চলবে। তাই আমরাও প্রস্তুতি রাখছি।’’রাজ্যে এই মুহূর্তে যেমনটা চলছে, তেমনটাই আগামী ২১ মে পর্যন্ত চালানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রাজ্য। সোমবার এমনটাই নবান্নে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, সংক্রমণের হার দেখে গোটা রাজ্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও দেওয়া হবে, সে ব্যাপারেও এদিন আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।