লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বুধবার নবান্নে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন কার্যকর থাকবে। সর্বদল বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফের একদিনে নতুন করে প্রায় ৫০০ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন পশ্চিমবঙ্গে। গত ২৪ ঘণ্টায় এরাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৫ জন। এরফলে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১৬ হাজার ছুঁইছুঁই। বৃহস্পতিবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, এরাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ১৫,৬৪৮ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একইসঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় এরাজ্যে আরও ১৫ জন করোনার শিকার হয়েছেন। একদিনে মৃত্যু হারের নিরিখে এখনও পর্যন্ত এটাই সর্বাধিক। আর এরসঙ্গেই করোনায় পশ্চিমবঙ্গে মোট মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়াল। মোট মৃত এখনও পর্যন্ত ৬০৬। অন্যদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪,৮৫২ জন।
প্রসঙ্গত, লকডাউন চালু হলেও নতুন করে কোনও বিধি নিষেধ আরোপ হচ্ছে না, যে নিয়ম ছিল সেগুলিই বলবৎ থাকছে। অর্থাৎ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। লোকাল ট্রেন এবং মেট্রোরেল পরিষেবাও বন্ধ রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে। আগের দফার মতো এ বারও কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতেই মূলত কঠোর বিধিনিষেধ জারি থাকবে। অন্যান্য এলাকায় থাকবে সামাজিক দূরত্ব বিধি এবং নৈশকালীন বিধিনিষেধ। বাস, ট্যাক্সি, অটো-সহ নানা গণপরিহণের জন্য যে সব আচরণ বিধি বেঁধে দেওয়া হয়েছে, বহাল থাকবে সে সবও। বুধবারের সর্বদল বৈঠকে আরও একবার মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে, ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ থেকে কেউ বঞ্চিত হবেন না। প্রথমে লকডাউনের জেরে তৈরি হওয়া সঙ্কট, তার পরে ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসলীলা— সব মিলিয়ে দুর্গত বহু মানুষ। তাঁদের সাহায্যার্থে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের যে সব প্রকল্প ঘোষণা করেছে সরকার, সে সব নিয়ে প্রবল দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে বিরোধী দলগুলি। মুখ্যমন্ত্রী আগেও একাধিক বার সতর্কবার্তা দিয়েছেন। ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ কতটা হয়েছে, সে নিয়ে সংশয় যথেষ্টই। ফলে বুধবার নবান্নে বসে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলকে আরও একবার আশ্বস্ত করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।