এই ব্রিগেডের গ্রাউন্ডে আশেপাশে একদিকে স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজির জন্মস্থান , ঋষি অরবিন্দ এর জন্মস্থান তো অন্যদিকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মভূমি। বিগত বছরগুলোতে অনেক বার এই স্লোগান উঠেছে ব্রিগেড চলো। এখানে রাজনৈতিক মানুষরা মিলে বাংলার যে হাল বানিয়েছে তা প্রজন্মের পর প্রজন্মের মানুষ সহ্য করেছে। এটা মানুষের ইচ্ছা শক্তি যে তাঁরা পরিবর্তনের আশা ছাড়েন নি। কিন্তু মমতা দিদি মানুষের আশা ভঙ্গ করেছেন। এরা বাংলার মানুষের আশা ভঙ্গ করেছে। মা মেয়েদের উপর অত্যাচার করেছেন। কিন্তু মানুষের সাহসকে দমাতে পারেনি। এই ভিড় তার প্রমান। বাংলা চায় উন্নতি, শান্তি। বাংলা চায় সোনার বাংলা। আমি দেখতে পাচ্ছি এইবার বিধানসভা নির্বাচনের একদিকে তৃনমূল আছে, বাম কংগ্রেস আছে। অন্যদিকে বাংলার জনতা কোমর বেঁধে তৈরি হয়েছে। আজ বিজেপিকে আশীর্বাদ দেয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ লোকের আগমন হয়েছে। সাধারণ মানুষ, বৌদ্ধিক লোক, শিল্পী সবাই নিজেদের আশীর্বাদ দিচ্ছে। সবার মনে একটাই ইচ্ছে। আমাদের বাংলা উপরে উঠুক। আজ আমাদের বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী ও উপস্থিত আছেন। তিনি তাঁর কর্মকান্ড লোকনাথ বাবার আশীর্বাদে লোকের কাছে পৌঁছাচ্ছেন। আজ ব্রিগেডে মানুষের হুঙ্কার দেখে আমার মনে হচ্ছে আজ ২ মে। সবাই হাত উপরে তুলে বলুন ভারতমাতা কি জয়। ভারত মায়ের আশীর্বাদে সোনার বাংলার সংকল্প ঠিক পূরণ হবে। উপস্থিত সমস্ত মানুষ, মা, মেয়ে, যুবকরা আজ বাংলায় আসল পরিবর্তনের জন্য এসেছে। আমি আজ ব্রিগেডে আপনাদের আসল পরিবর্তনের বিশ্বাস দিতে এসেছি। বাংলায় উদ্যোগ বাড়ানো, বাংলার পুনর্নির্মাণ, সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষার বিশ্বাস দিতে এসেছি আমি।

এখানে কৃষক, উদ্যোগী, মা, মেয়ে, যুবকদের জন্য আমরা ২৪ ঘন্টা দিন রাত কাজ করব। আমরা প্রত্যেক মুহূর্ত আপনাদের জন্য বাঁচব। আপনাদের সেবা করব। আপনাদের আশীর্বাদ নিয়ে শুধু নির্বাচন নয়, সব সময় আপনাদের হৃদয় জিতব আমাদের কাজ, পরিশ্রম দিয়ে। এখানে যে বিজেপি সরকার আসবে তাতে বাংলার লোকই প্রাধান্য পাবে। এখানে বিজেপি সরকারের মূল মন্ত্র হবে আসল পরিবর্তন। আসল পরিবর্তনের অর্থ হল এমন বাংলা যেখানে যুবকদের শিক্ষা, কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ মিলবে, মানুষকে অন্য জায়গায় যেতে না হয়, ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি, ইনফ্রাস্ট্রাকচার হবে, যেখানে গরিবদেরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হবে। উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণবঙ্গ, শোষিত, আদিবাসী, শরণার্থী সবাইকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। যেখানে সবার সাথ, সবার বিকাশ হবে। তুষ্টিকরন হবে না। অবৈধ অনুপ্রবেশ হবে না। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বাংলা যা হারিয়েছে, ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে সেটা আমার থেকে আপনারা বেশি ভালো জানেন। আমি আজ এই সঙ্কল্প করছি যা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। একটি নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে যাবে। দেশের মতই আগামী ২৫ বছর বাংলার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ৫ বছরের বিকাশ ২৫ বছরের সোপান তৈরি করবে। ২৫ বছর পর দেশ যখন স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে তখন বাংলাই আবার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলায় জীবনযাপনের জন্য সব রসদ মজবুত। কলকাতা হল সিটি অফ জয়। এখানে ভবিষ্যতের অনেক সম্ভবনা। কলকাতার ঐতিহ্য ধরে রেখে সিটি অফ ফিউচার বানানো সব। কিছুদিন আগেই একটি লিস্ট বেরিয়েছে উন্নত শহরের। এখানের মানুষের ইচ্ছে সেই লিস্টে কলকাতার নাম থাকবে। তার জন্য যা করা দরকার আমরা করব। কলকাতার মেট্রো দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করছে। এখানে ডাবল ইঞ্জিন এলে। এখানে কমিশন এর জন্য কলকাতা বন্দরের কাজ থমকে আছে। স্মার্ট সিটি প্রজেক্টের নতুন দিশা হবে, নতুন ফ্লাইওভার, থমকে থাকা ফ্লাইওভার গুলি দ্রুত শেষ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর হবে।

স্বনিধি যোজনার লাভ পাবেন মানুষ। কলকাতার সঙ্গে সঙ্গে বাকি শহরগুলোতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। ফুড প্রসেসিং উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হবে। কৃষক থেকে মৎস্যজীবী সবার উপকার হবে। আসল পরিবর্তনের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, নগর নিগম ঠিক করা হবে। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে পুনরায় মজবুত করা হবে। পুলিশ প্রশাসনের উপর মানুষের বিশ্বাস হয় সেই পরিবেশ আমরা করব। স্কিল ডেভলপমেন্ট এর প্রকল্প কে ধ্যান দেওয়া হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি ইত্যাদি পড়ায় বাংলা ভাষায় জোর দেওয়া হবে। গরিব ঘরের সন্তানও যাতে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারে সেটার ব্যবস্থা করা হবে। শুধু ক্ষমতায় পরিবর্তন নয়। বিকাশ কেন্দ্রীক রাজনীতি হবে। তাই জন্য আসল পরিবর্তন চাই। এই পরিবর্তনে বাংলার মানুষকে মনে রাখতে হবে কিভাবে তাঁদের ঠকানো হয়েছে। স্বাধীনতার পর কিছুদিন কাজ হয়েছিল। কিন্তু তারপর বাংলায় ভোটের রাজনীতি হয়েছে।

কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও এই স্লোগান দিয়ে বাম ক্ষমতায় এসেছে। আজ আমি জিজ্ঞেস করতে চাই সেই হাত আজ হাত সাদা কিকরে হয়ে গেল। যে হাত গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতেন সেই হাত ধরেছে। মমতা দিদি মা মাটি মানুষের স্লোগান দিয়েছেন। বাংলার মানুষ যে আশা করেছিলেন সেই পরিবর্তন আসেনি। শ্রমিক, কৃষকদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গরিব আরো গরিব হোক এইটাই হয়েছে। এখানে হাসপাতালে, স্কুলে, বেকারদের জীবনে, খুন খারাপের রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আজ বাংলায় মা মাটি মানুষের যা পরিস্থিতি তা আপনারা জানেন। মায়েদের উপর হামলা হচ্ছে। ৮০ বছরের মায়ের উপর যে হামলা হয়েছে গোটা দেশ দেখেছে। বাংলায় খুব কম মা, মেয়ে আছেন যাঁরা কাঁদেন নি।

আমি যে শব্দ বলব সেটা আপনাদেরও বলতে হবে পূর্ণ শক্তি নিয়ে। বলবেন আপনারা? আপনাদের বলতে হবে আর নয় অন্যায়।
ভ্ৰাষ্টাচার, তোলাবাজি, কর্মহীনতা, তুষ্টিকরন, অন্যায়, আর নয় অন্যায়। শুনলেন দিদি? এটা বাংলা, বাঙালির আওয়াজ। আজ আপনাকে একটাই প্রশ্ন করছে দশ বছর পরে তাঁরা আপনাকে দিদির ভূমিকায় নির্বাচিত করেছিল। কিন্তু আপনি নিজেকে একজন ভাইপোর পিসির রূপে কেন নিজেকে সীমাবদ্ধ করলেন? বাংলার লক্ষ লক্ষ ভাইপো ভাইঝির জন্য না ভেবে একজনের লোভের কথা ভাবলেন। এত অন্যায় করার পর নতুন স্লোগান দিচ্ছেন। আপনি শুধু বাংলার নয় পুরো দেশের মেয়ে। আপনি স্কুটিতে শওয়ার হলেন। আপনি ভাগ্গিস পড়ে যাননি। নাহলে স্কুটি যে রাজ্যে হয়েছে সেই রাজ্যকে নিজের শত্রু  বানিয়ে নিতেন। আপনার স্কুটি ভবানীপুরের বদলে নন্দীগ্রামের দিকে যাচ্ছে। স্কুটি নন্দীগ্রামে পড়বে। আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের একদিন পূর্বে আমি পশ্চিম বঙ্গের মাটিকে প্রণাম করতে এসেছি। এই মাটি মা সারদা, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দার, রানী রাসমনির মাটি। আমাদের যোজনায় মহিলাদের প্রাধান্য। বাড়িও মহিলাদের নামে। ৪ কোটির বেশি জনধন একাউন্ট মহিলাদের নামে। মুদ্রা লোনের ৭৫% হলেন মহিলা। বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ করোনাকালে মানুষের উপকারে লেগেছে। সব ঘরে জল পৌঁছানোর প্রকল্প শুরু হয়েছে।

তৃনমূল বলল এখানে জলের প্রাচুর্য আছে। এখানে জল জীবন মিশনের দরকার আছে। এখনো দেড় কোটি বেশি বাড়িতে জল নেই। অনেক জেলায় আর্সেনিক যুক্ত জল খেয়ে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। গরিবদের জন্য ভাবা কি আমাদের কাজ নয়? তাতেও রাজনীতি? প্রত্যেক ঘরে জল পৌঁছানোর জন্য যে টাকা তা অর্ধেকের বেশি খরচ করতে পারেনি। বলুন তৃনমূল অপরাধী নয় কি না? এদের শাস্তি পাওয়া উচিত কিনা? দিদি যেন জিদ ধরে বসে আছেন না কাজ করব, না করতে দেব। আপনারা বলুন এরকম সরকারকে আপনারা উৎখাত করবেন কিনা। আমরা যা বলি তা সময় সীমার মধ্যে করে দেওয়ার চেষ্টা করি। বিরোধীরা বলেন যে আমি আমার বন্ধুদের জন্য কাজ করি। আমাদের চারপাশের মানুষ যাঁদের সঙ্গে আমরা বড় হই তারাই আমাদের বন্ধু। আমি নিজেও গরিব পরিবেশে বড় হয়েছি। আমি তাঁদের অনুভূতি বুঝি। তাই তাঁরা আমার বন্ধু। আমি এদের জন্য করি।আর করব। ৯০ লক্ষ গ্যাস কানেসকসন, ৭ লক্ষ বিদ্যুৎ, দলিত, পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য যোজনা, চা বাগানে কাজ করে যাঁরা তাদের সঙ্গে আমার অন্য রকম সম্পর্ক। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সোশ্যাল সিকিউরিটি প্রকল্প হয়েছে। ১০০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ। কারন এঁরাই আমার বন্ধু। করোনায় সবার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। কিন্তু গরিবদের বেশি কষ্ট হয়েছে। আমি ফ্রিতে রেশন, গ্যাস, টাকা দিয়েছি।

ফ্রিতে ভ্যাকসিনের অঙ্গীকার দিয়েছি। ১৩০ কোটি আমার বন্ধু। এঁরাই আমার বন্ধু। আমি আমার কোটি কোটি বাংলার বন্ধুদের জন্য আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে সুবিধা দিতে চাই। এখন আপনারা বলুন বন্ধুত্ব চলবে নাকি তোলাবাজি। এতে দিদির আর তাঁর ভাইদের হুঁশ উড়েছে। তাই বলছে খেলা হবে খেলা হবে। এখানে তোলাবাজি, সিন্ডিকেট করেছেন। আপনি মানুষের হকের চাকরি খেয়েছেন। আর এই খেলা চলবে না।আপনারা বলুন এই খেলা বন্ধ হওয়া উচিত কিনা। দিদি এই শঙ্খ নাদ শুনুন।তৃনমূলের খেলা শেষ। বিকাশ শুরু। ভয় পাবেন না।নির্ভয়ে বিজেপিকে ভোট দিন। বাংলা উন্নতি চায়। বাংলার জয় ভারতের জয়। আমাদের শাস্ত্রে বলে ক্রোধে বুদ্ধি নাশ হয়, ভুল করে সব হারিয়ে ফেলে মানুষ। রাগের চোটে কি বলছেন আমায় দিদি। রাবন,দৈত্য, দানব, গুন্ডা। দিদি এত রাগ কেন? আজ পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম ফুটছে আপনার তৈরি করা পাঁকের জন্য। এই দিদি সেই দিদি নয় যিনি বামপন্থীর বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠিয়েছিলেন। দিদির নিয়ন্ত্রণ এখন অন্য হাতে। বিজেপিকে বহিরাগত বলে যাঁরা তাঁদের জিজ্ঞেস করুন কংগ্রেসের জন্ম দিয়েছেন যাঁরা তাঁরা কারা?বামপন্থী ভাবনা কি বহিরাগত নয়? তৃনমূলের জন্মও কংগ্রেস থেকে। বিজেপির ভিত্তি ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির তৈরি। বিজেপি সেই দল যার প্রতি বাংলার ঋণ অনেক। যা মেটানো সম্ভব নয়। দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য থেকে ছোট রাজ্যে বিজেপি শাসন করছে।

পদ্মফুলে বাংলার মাটির গন্ধ লেগে আছে। তাই এইবার তৃনমূল পুরো সাফ। আপনারা বাংলার জন্য যে লড়াই ত্যাগ করেছেন আমি তাকে প্রণাম করি। বিজেপির কার্যকর্তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সঙ্গে আছি। বাংলায় ভয়ের পরিস্থিতি ২ মের পর আর থাকবে না। সরকারি কর্মচারীদের বলছি কোনো রাজনৈতিক দলের কথায় কাজ করবেন না। ২০১৮ সালে মন্ত্র ছিল চুপচাপ পদ্মে ছাপ। এবার মন্ত্র জোরসে ছাপ, তৃনমূল সাফ। সবাই মিলে বলুন এবার আসল পরিবর্তন, চাকরি, মহিলা সুরক্ষা, কৃষক সুরক্ষা, সোনার বাংলা এবার ।

Find out more: