১৩ বছর পার। বাংলায় তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় তৃণমূল সরকার। আর তারপরই বাংলায় টাটাকে স্বাগত জানালেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিল্পমন্ত্রী বলেন, ''টাটার সঙ্গে আমাদের কোনও শত্রুতা ছিল না। ওদের বিরুদ্ধে কোনও লড়াইও আমরা করিনি। লড়াইটা ছিল বাম সরকারের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে। টাটারা দেশের অত্যন্ত সম্মানীয় শিল্পসংস্থা। তাদের কোনও দোষ ছিল না। বাম সরকার জোর করে জমি অধিগ্রহণ করার নীতি নিয়েছিল। আমরা বলব, টাটারা সব সময়েই এরাজ্যে স্বাগত।'  পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সংযোজন, ‘‌আমরা শিল্প স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের প্রক্রিয়া সহজ করব। জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। জমি নীতিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। তিনি বলেন, ‘‌শিল্প সংস্থাগুলিকে নিজস্ব বা সরকারের নির্দিষ্ট ল্যান্ড ব্যাঙ্ক ও শিল্প পার্কের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।’‌

রাজ্যে টাটা সেন্টার, টিসিএস-এর পাশাপাশি টাটা মেটালিক্সের বিনিয়োগ রয়েছে। এরপর বড় কোনও বিনিয়োগের স্বার্থে টাটা গ্রুপ রাজ্যে এলে তাদের স্বাগত।তথ্য-প্রযুক্তি সচিব বলেছেন, টাটা গ্রুপ একটা টাটা সেন্টার তৈরি করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এমনটাও ওই সংবাদ সংস্থাকে জানান শিল্পমন্ত্রী।

২০০৬-’০৭ সাল জুড়ে সিঙ্গুর আন্দোলনে মুখরিত ছিল বাংলা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা। সেই আন্দোলন পর্বের শেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো সিঙ্গুরের হাজার একর জমি রাজ্য সরকারকে ফিরিয়ে দেয় টাটা। আদালত জমি অধিগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াকে ‘অনৈতিক’ বলে রায় দেয়। আদালত জানায়, কোনও পরিস্থিতিতেই ওই ভাবে জমি অধিগ্রহণ করাকে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়া যায় না। বিরোধী তৃণমূলের আন্দোলনের জেরে ১৩ বছর আগে সিঙ্গুর ছেড়ে টাটার ন্যানো কারখানা চলে গিয়েছিল গুজরাতের সানন্দে। রাজ্য রাজনীতিতে তার পরেও জল গড়িয়েছে বহুদূর। সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকে সামনে রেখেই বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর তিনিই রাজ্যের হাল ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে।

Find out more: