পাঞ্জাবের ভাতিন্ডা শহরের গুরুকাশি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি ক্ষেত্রে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে দ্বৈত্য স্বিকৃতি বা ডুয়াল অ্যাক্রেডেশন লাভ করেছে। দেশের কৃষি ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের (আইসিএআর) এর অনুমোদন পাওয়ার পর গুরুকাশি বিশ্ব বিদ্যালয় কৃষিতে বিএসসি অনার্স কোর্সের জন্য পাঞ্জাব সরকারের ‘পাঞ্জাব স্টেট কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল এডুকেশন’এর অনুমোদনও লাভ করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ২০১৭ সালে পাঞ্জাব সরকার কৃষিক্ষেত্রে ও কৃষি শিক্ষায় সঠিক মানের বিষয় লক্ষ রাখতে পাঞ্জাব  স্টেট কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচার এডুকেশন গঠন করে। এক্ষেত্রে গুরুকাশিই দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে একাধারে আইসিএআর ও অন্যদিকে রাজ্য সরকারের অনুমোদন লাভ করেছে। আজকের সাংবাদিক সন্মেলনে প্রথমেই এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সহ উপাচার্য্য ডা. জে. এস. ধিমান এবং ডাইরেক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বিষয়ে নোডাল অফিসার ডা. অশ্বনি শেঠি।

ডা. জে. এস. ধিমান তাঁর বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি উচ্চ মানের শিক্ষাদান পদ্ধতি, অত্যন্ত উন্নত মানের পরিকাঠামো, দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্যাকাল্টি, উন্নত ও বিশেষত্বপুর্ন গবেষণাগার, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মিসমূহ ও সর্বোপরি কোর্স শেষে প্লেসমেন্টের নিশ্চয়তা সম্পর্কে বিস্তৃত ব্যাখ্যা করেন। বস্তুত বিষয়গুলির উচ্চ মানের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় আজ কৃষিক্ষেত্রে প্রথম ডুয়েল অ্যাক্রেডেশন লাভ করেছে। এই স্বিকৃতির পেছনে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশাসন ও অধ্যাপক বৃন্দের বহুবছরের পরিশ্রম। ডা. ধিমান আরো জানান যে গুরুকাশি কৃষিক্ষেত্রে অগ্রণী হলেও বিশ্ব বিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিভিন্ন প্যারামেডিক্যাল কোর্সগুলিও নিজ নিজ বৈশিষ্টে উজ্জ্বল ও অত্যন্ত জনপ্রিয়। কৃষি ছাড়াও অন্য ফ্যাকাল্টি গুলিতেও শুধু পাঞ্জাব নয় অন্যান্য রাজ্য ও বিদেশ থেকেও বহু ছাত্রছাত্রী যোগদান করে।
 ডাইরেক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বিষয়ে নোডাল অফিসার ডা. অশ্বনি শেঠি পশ্চিমবঙ্গের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের প্রশংসা করে জানান এ রাজ্যের ছাত্ররা বিভিন্ন বৃত্তিমুখী শিক্ষাক্রমের জন্য অবশ্যই গুরুকাশিকে নির্বাচন করতে পারে কারন এখানকার বিএসসি এগ্রিকালচার (অনার্স), ফিসারিজ, নিউট্রিশন ও ডায়াটিক্স, এমবিএ, বিটেক  বি ফার্মা, প্রভৃতি ব্যবহারিক শিক্ষাক্রম গুলি অত্যন্ত উচ্চ মানের ও প্রথম শ্রেণির।


প্রশ্নোত্তর পর্বে কোভিড অতিমারিতে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য বিষয়ে আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানান হয় যে তাঁদের প্রতিটি প্রধান কোর্সকে অনলাইন কার্যক্রমে পরিবর্তিত করা হয়েছে এবং কোন ছাত্রের পশ্চিমবঙ্গের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয় সকল সময়েই স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে থাকে।


গুরুকাশি সব সময়েই বিশ্বাস করে যে আর্থিক প্রতিবন্ধকতায় কখনোই কোন মেধাবী ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে না। তাই তাঁরা এবিষয়ে দেশের অন্যান্য সকল অঞ্চলের মতোই পশ্চিম বঙ্গ ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের পাশে আছেন। তাছাড়া গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর রাজ্যকে পাঞ্জাব বিশেষ সম্মান করে। শুধু জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা নয় গুরুদেব একদিকে যেমন গুরুনানকদেবের ‘আরতি’ ভাবানুবাদ করেছেন  তেমনি তাঁর বিভিন্ন কবিতায় শ্রদ্ধা জানিয়েছেন গুরু তেগ বাহাদুর, বান্দা বাহাদুরের মতো শিখ গুরুদের ভক্তি ও দেশপ্রেমকে। তাই গুরুকাশি  বরাবরি বাঙ্গালি ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ স্থান দেয়।
প্রতিটি ব্যবহারিক শিক্ষাক্রমের শেষে এখানে ইন্টারনশিপের ব্যবস্থা করা হয়। পড়াশোনার শেষে এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে মেধাবী ছেলেমেয়েরা একই সঙ্গে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে। ফলে কর্ম জীবনের শুরুতেও তাঁদের কোন অসুবিধা হয় না। ছাত্রাবস্থায়ও এখানে নিয়মিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ও হাতেকলমে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়।  এই জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দেশের অনেকগুলি বিশিষ্ট সংস্থার অ্যাকাডেমিক ‘মৌ’ সাক্ষরিত হয়েছে। আবার বিশেষ কয়েকটি কোর্সে এখান থেকে  ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশেও পাঠান হয়ে থাকে।

 
পরিশেষে ডা. ধিমান জানান দেশের কৃষক শ্রেণির উন্নত বিজ্ঞান ও কারিগরি চাহিদার বিষয়ে তাঁরা অবহিত।  তাই  কৃষি ও অন্যান্য্ কারিগরি ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ তৈরি করাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য।

Find out more: