আফিগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। কিন্তু পঞ্জশির উপত্যকাকে দখল করার স্বপ্ন অধরাই থেকেছে আমেরিকা ও রাশিয়া, তালিবদের। একা কুম্ভের মতো পঞ্জশির বরাবর বুক দিয়ে তার গড় রক্ষা করে। হয়তো এবারেও করবে। কেননা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পঞ্জশির দখল করা কেন সম্ভব নয় ?
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালায় পঞ্জশির উপত্যকা বরাবরই দুর্ভেদ্য দুর্গ। পঞ্জশিরের প্রধান রক্ষাকবচ তার প্রকৃতি। অত্যন্ত দুর্গম হিন্দুকুশ পর্বতমালা, আর তার হাড়জমানো ঠান্ডা। আর রয়েছেন সেখানকার তাজিক জনগোষ্ঠীর লক্ষাধিক মানুষ। তাজিক জনগোষ্ঠীর মানুষ বংশানুক্রমেই যে কোনও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বরাবর গর্জে ওঠেন। পঞ্জশিরের নামকরণেই রয়েছে সেই লড়াইয়ের ইতিহাস। ‘পঞ্জশির’ কথাটির অর্থ পাঁচটি সিংহ। সেটা দশম শতাব্দীর কথা। সেই সময়ের আফগানিস্তান ছিল গজনির শাসক সুলতান মেহমুদের অধীনে। ভয়াল পাহাড়ি বন্যায় তখন ভেসে যেত গোটা পঞ্জশির উপত্যকা। তখন উপত্যকার পাঁচ ভাই মিলে গড়ে তুলেছিলেন সুবিশাল বাঁধ। যা পঞ্জশিরকে পরে ভয়াল বন্যার আগ্রাসন থেকে বাঁচিয়েছিল। পাঁচ ভাইয়ের সেই সিংহবিক্রমকে স্মরণে রাখতেই পরে উপত্যকার নাম হয় পঞ্জশির।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যখন গোটা আফগানিস্তানে দাপিয়ে বেড়িয়েছে তালিবান, তখন তাদের বিরুদ্ধে মনে রাখার মতো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল প়ঞ্জশিরই। সেই সময় তালিবদের ঠেকাতে পঞ্জশিরের তাজিকরা দেশের উত্তর প্রান্তের অন্য জনগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে গড়ে তোলে ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স’। সেই জোটের নেতৃত্বে ছিলেন আহমেদ শাহ মাসুদ, আমরুল্লা সালেহ্, বিসমিল্লা খান মোহাম্মদি, করিম খলিলি, আবদুল রশিদ রস্তুম, আবদুল্লা আবদুল্লা, আবদুল কাদির, আসিফ মোহ্সেনি এবং মোহাম্মদ মোহাকিকের মতো লড়াকুরা। সেটা এক দিনে হয়নি। বিদেশি হানাদার ও তালিবদের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য গত ৪ দশক ধরে অস্ত্র মজুত করে গিয়েছেন তাজিকরা।
Find out more: