২০ বছর পর কেন্দ্রীয় পূর্ণ মন্ত্রী থাকাকালীন দেশের কোনও নেতা গ্রেফতার হলেন। আজ, মহারাষ্ট্রে গ্রেফতার করা হল নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নারায়ণ রানে (Narayan Rane)-কে। দেশের স্বাধীনতার সাল ভুলে যাওয়ায় মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরেকে তিনি চড় মারবেন, এমন কু ভাষণের কারণে রানেকে গ্রেফতার করা হল। সোমবার রায়গড়ে উদ্ধব সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রানে। জন আশীর্বাদ যাত্রা চলাকালীন তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানেন না, কোন বছর ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। এটা লজ্জার বিষয়। ১৫ অগাস্ট ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি অন্যদের জিজ্ঞাসা করেন, এবার স্বাধীনতার কত বছর। আমি যদি সেখানে থাকতাম, তাহলে তাঁকে কষিয়ে চড় মারতাম।'  নারায়ণ রানে মহারাষ্ট্র রাজনীতি খুবই বর্ণময় চরিত্র। ১৯৯৯ সালে শিবসেনা তাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছিল। ২২ বছর পর তারাই জেল ভরে দিল রানেকে। কংগ্রেস আমলেও দলবদল করে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিল। আবার মাত্র ক মাস বিজেপিতে যোগ দিয়েই, একেবারে কেন্দ্রীয় পূর্ণ মন্ত্রীও হয়েছেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক নারায়ণ রানেকে নিয়ে কিছু তথ্য-

১) যে দলের সরকার তাঁকে কু মন্তব্যের জন্য জেলে পাঠাল সেই শিবসেনা থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন নারায়াণ রানে। ১৯৯৯ সালে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীও করেছিল দল। বাল ঠাকরের স্নেহধন্য ছিলেন।

২) চার বছর দায়িত্ব সামলানোর পর শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী মুরলী গঞ্জন যোশী সরে দাঁড়ানোর পর, ১৯৯৯ সালে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন নারায়ণ তাতু রানে। তিনি আট মাসের মত মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

৩) ২০০৫ সালে তাঁকে দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করে শিবসেনা। তখন থেকেই শিবসেনার ওপর বিশেষ ক্ষোভ। পরে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ভোটে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী হন।

৪) কংগ্রেসেও বেশিদিন টিকতে পারেননি। ২০০৮ মুম্বই জঙ্গি হামলার পর বিলাস রাও দেশমুখকে সরিয়ে কংগ্রেস যখন অশোক চৌহানকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়। তাকে কেন মুখ্যমন্ত্রী করা হল না, সেই ক্ষোভে রানে কংগ্রেস ছাড়েন। দলবিরোধী কাজের জন্য রানেকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করে কংগ্রেস। পরে চিঠি লিখে সোনিয়ার কাছে ক্ষমা চাইলেও কংগ্রেস তাকে ফিরিয়ে নেয়নি।

৫) ২০১৭ সালে নতুন দল গড়েন। যার নাম দেন মহারাষ্ট্র স্বাভিমান পক্ষ। বিজেপি-র সঙ্গে জোটও গড়েন। কিন্তু সে সময় বিজেপি-র সহযোগি দল শিবসেনার প্রধান উদ্ভব ঠাকরকে বলেছিলেন, তিনি রাজনীতির কিছুই বোঝেন না।

৬) ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর নিজের পার্টি তুলে সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেন। ক দিন আগে মোদী টু সরকারের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূ্র্ণ দফতর পান। তিনি দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প উন্নয়ন দফতরের ক্যাবিনেট মন্ত্রী।

৭) ১৯৯৯ সালে ক মাসের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি, ১৯৯৯-২০০৫ পর্যন্ত রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তিন দফায় রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। এখন দেশের মন্ত্রী।


তথ্য সৌজন্য -দ্য ফ্যাক্ট ইনফো

Find out more: