বৃহস্পতিবার রাতে উদিনেসের ঘরের মাঠে ১-১ ড্র করতেই নাপোলির লিগ জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিলানের থেকে ১৬ পয়েন্ট এগিয়ে যায় তারা যা অতিক্রম করা আর সম্ভব নয়। নাপোলির কোচ লুসিয়ানো স্প্যালেতি (Luciano Spalletti) এর আগে রাশিয়ার ফুটবল লিগ জিতেছেন। নিজের দেশে অন্য ট্রফি জিতেছেন কিন্তু সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সিরি আ জেতা হয়নি। বৃহস্পতিবার সেই অধরা মাধুরী স্পর্শ করলেন তিনি।
‘ঘরের ছেলে’ মারাদোনার মৃত্যুর পর তাঁকে সম্মান জানাতে সান পাওলো স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয়েছিল দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা স্টেডিয়াম। সেই মাঠেই আগের ম্যাচে সালেরনিতানাকে হারারে পারলে আগের ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারত নাপোলি।
এদিন ম্যাচ শুরুর আগেই নাপোলির সমর্থকরা বন্যার জলের মতো নেপলস শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তাতেই ভিড় করে ম্যাচ দেখতে থাকে তারা। একটা অংশ আবার মারাদোনা স্টেডিয়ামে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখতে চলে যায়। ম্যাচ শেষ হতেই সমর্থকদের হাতে জ্বলে উঠল আতসবাজি। চলল প্রিয় খেলোয়াড়দের নিয়ে জয়ধ্বনি। ৩৩ বছর পর লিগ জেতার আনন্দে আত্মহারা গোটা নেপলস শহর।
লিগ জয়ের নেপথ্যে বেশ খানিকটা কৃতিত্ব পাবেন নাপোলির নাইজেরীয় স্ট্রাইকার ভিক্টর ওসিমহেন (Victor Osimhen)। ২২ গোল করে এ মরশুমে সিরি আ-র সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। নজর কেড়েছেন খিচা কারাতস্খেলিয়া। নাম করতে হবে সেন্টার ব্যাক কিম মিন-জায়ে এবং মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্ক অ্যাঙ্গিসারও। মরশুমের শুরুতেই টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকা এবং জানুয়ারি থেকে ১১ ম্যাচে ১০টা জয় আসাই নাপোলির সাফল্যের প্রধান কারণ। প্রশংসা করতেই হবে কোচ স্প্যালেতির। কালিদু কুলিবালি, ড্রিস মেরতেন্স, লোরেঞ্জো এনসিনিয়া, ফাবিয়ান রুইজের মতো ক্লাবের স্তম্ভদের হারাতে হয়েছিল এ মরশুমে। তা সত্ত্বেও চার ম্যাচ বাকি থাকতে চ্যাম্পিয়ন তাঁর দল।
আজ বেঁচে থাকলে সবথেকে খুশি হতেন মারাদোনা। ৩৩ বছর পর তাঁর ভালোবাসার ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। যে ক্লাব এককালে নীচের সারিতে ছিল তাকে প্রায় একার হাতে ইতালির সেরা করেছিলেন মারাদোনা। এখনও নেপলস শহরের অলিগলিতে তাঁর পোস্টার ঝোলে, বাড়ির দেওয়ালে আঁকা থাকে তাঁর ছবি। এই সুখের দিনে তাঁকে বাদ দিয়ে উৎসব করার কথা ভাবতেই পারে না নেপলস শহরের মানুষ।